HSN কোড এবং NIC কোড কী ? এই বিষয় গুলো কিভাবে জেনারেল স্টোরকে সাহায্য করে?
কোনো জেনারেল স্টোর হোক বা ওষুধ কারখানা হোক ছোট বড়ো সমস্ত জিনিস উৎপাদন থেকে শুরু করে তাকে ব্যবহার করা পর্যন্ত অনেক রকম নিয়ম, নিষেধাবলী, ব্যাবহারিক তাৎপর্য এর মধ্যে যেতে হয়। জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্তর সব দিকেই এরকম কিছু কোড থাকে যেগুলো এই প্রোডাক্ট গুলোকে মানুষের ব্যবহারের যোগ্য করে তোলে।নিশ্চিন্ত ভাবে একজন ব্যাক্তি তাকে গ্রহণ করতে পারে। কোন নতুন জিনিস আবিষ্কার হলে বিভিন্ন্ রকম পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে সেটা বাজারে আসে এবং আমরা সেটা ব্যবহার করি। কোনো জেনারেল স্টোর বা সাধারণ দোকান এর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সমান। এই কোড যখন কোনো প্রোডাক্টে ইউস করা হয় ধরে নেয়া হয় সেটা ব্যবহারের উপযুক্ত। একটা জেনারেল স্টোরে কিভাবে HSN কোড এবং NIC কোড কে কাজে লাগানো হয় এবং এই কোড গুলোই বা কেন কিভাবে কোনো প্রোডাক্টের ওপর আপ্লাই করা হয় সব তা নিয়ে আমাদের আজকের আলোচনা। যারা ব্যবসা করছো তাদের পাশাপাশি যারা বিষয় গুলো জেনে বুঝে ব্যবসা শুরু করবে ভাবছো সবার ক্ষেত্রেই এই আলোচনা ভীষণ ভাবে কার্যকর হবে বলেই আমার মনে হয়।
HSN কোড
HSN কোডের ফুল ফর্ম হারমোনিসড সিস্টেম নমেনক্লাচের। ওয়ার্ল্ড কাস্টমস অর্গানাইজেশন দ্বারা এই পদ্ধতিটি ১৯৮৮ সালে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলো।পৃথিবীতে যত রকম জিনিস আছে সব জিনিস গুলোই একটা গ্রুপের মাধ্যমে ভাগ করা হয়। যে প্রোডাক্টগুলো আন্তর্জাতিক স্তরের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত এবং প্রচুর পরিমানে মানুষ সেগুলো থেকে উপকার পেয়ে থাকে সেই জিনিসগুলো HSN কোডের অন্তর্ভুক্ত। একটা সুগঠিত পদ্ধতিতে সব ব্র্যান্ড এবং তার জিনিস গুলোকে শ্রেণিবিভাগ করাই এর কাজ। যে সমস্ত প্রোডাক্ট এই কোডের অন্তর্ভুক্ত সেগুলো যে কেউ নিশ্চিন্তে কিনতে পারে। খাবার জিনিস থেকে শুরু করে কোনো শ্যাম্পু, টুথপেষ্ট বা মুখে মাখার যে কোনো জিনিস সব জিনিসেরই একটা করে HSN কোড থাকে। এক্ষেত্রে জিনিস বলতে তার ব্র্যান্ড কে বোঝায়। একটা HSN কোড ইমপোর্ট এক্সপোর্টের ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা পালন করে। ইন্টারন্যাশনাল ক্ষেত্রে এই কোডটি আট ডিজিটের হয়ে থাকে। দেড় কোটি থেকে পাঁচ কোটির কম এই কনসিউমার এর পরিমান হলে সেখানে দুই ডিজিট কোড ব্যবহার করা হয়। আর এই জিনিস্ গুলোর ভ্যারাইটি অনেক রকম হয় তাই দুই সংখ্যার কোডের জন্যে এই বিভাগটা ভালো হয়। পাঁচ কোটি টাকার বেশি এই পরিমান হলে সেখানে চার ডিজিট কোড ব্যবহার করা হয়।
কোনো জিনিস বানানোর সময় তার ভিতরে এমন কিছু উপকরণ থাকতে হয় যেগুলোর সাহায্যে জিনিসটি তৈরী করলে মানুষ সেটা ব্যবহার করলেও কোনো ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে না এবং এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকেই এই কোডের উদ্ভব হয়েছিলো। একটা আন্তর্জাতিক জিনিসকে যখন অনেকগুলো দেশ ইউস করে তখন বিভিন্ন নামে সেই জিনিসটা পরিচিত হয় কিন্তু জিনিসটা একই থাকে। আন্তর্জাতিক স্তরে একটা বিভিন্ন বস্তুর উপর ডিপেন্ড করে একটা লিস্ট বানানো হয় এবং পৃথিবীতে যত রকম জিনিস আছে তার ৮০ থেকে ৯০ % এই লিস্টের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকে। একটা ছোট্ট উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা আরো ভালো করে বোঝানো যায়। ধরা যাক কিছু চাল রাখা আছে। এবার চাল তো অনেকরকম হয়। বাসমতি থেকে শুরু করে বাসকাঠি অনেক রকম নাম ও আছে তাদের। কিন্তু তাদের গোত্র একটাই সেটা চাল। এই ‘চাল‘ কথাটি এক্ষেত্রে নমেনক্লাচের অর্থাৎ শ্রেণী এবং তার প্রকারভেদ গুলো শ্রেণীবিভাগ।
NIC কোড
NIC কোড অর্থাৎ ন্যাশানাল ক্লাসিফিকেশন কোড একটা পরিসংখ্যান সংক্রান্ত মানদণ্ড যেটা বিভিন্ন রকমের আর্থিক কাজকর্মের ওপর ভিত্তি করে তার উন্নয়ন এবং রক্ষনাবেক্ষনের কাজ করে। এই কোডটি চালু করা হইছিলো একটা নিশ্চিত অভিপ্রায়ে। দেশের জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কে উন্নয়ন ও সুনির্দিষ্ট পথে চালনা করাই ছিল এর প্রধান লক্ষ্য। প্রতিটি অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপ যাতে একটা নিয়মমাফিক পথে চলতে পারে আর সেই পর্যবেক্ষণ যাতে সুষ্ঠু ভাবে করা যেতে পারে তার জন্যেই এই কোড চালু করা হয়েছিলো। যে সব খুচরা স্টোরে কোনো স্পেশালাইজেড জিনিস এর পরিবর্তে সব রকম জিনিসই যেমন খাবার,পানীয় প্যাকেটজাত দ্রব্য বিক্রি করা হয় সব জিনিসের ক্ষেত্রে এই NIC কোড আলাদা হয়। জিনিসের ওপর ডিপেন্ড করে এই NIC কোডকে সংখ্যার পরিমানের ভিত্তিতে অনেকভাগে ভাগ করা হয়েছে। সব রকম ব্যাবসায়িক কাজকর্মের যে দলীয় এবং বৃহৎ বিভাগ তার জন্যে ২ থেকে ৩ ডিজিট কোড, নির্দিষ্ট ধরণের এবং তুলনামূলক ভাবে ছোট ব্যাবসায়িক কাজকর্মের জন্যে ৪ ডিজিট কোড এবং অর্থনৈতিক কাজকর্মের যে সংক্ষিপ্ত উপশ্রেণী সেটাকে ৫ ডিজিট কোড দ্বারা প্রকাশ করা হয়। NIC কোড একধরণের ব্যাবসায়িক সংকেত যেটা সরকারি কর্তৃপক্ষ থেকে প্রদান করা হয়। বিভিন্ন অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি মানের উদ্যোক্তা দ্বারা পরিচালিত ব্যাবসায়িক এর পদ্ধতি গুলো সঠিকভাবে যাচাই করতে এই বিসনেস কোডটি সরকার দ্বারা প্রদত্ত হয়। NIC কোড বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ব্যাবসায়িক পদ্ধতি মনোযোগ এবং যথার্থ ভাবে হচ্ছে কিনা সেগুলো যাচাই করে।
এই বিষয় গুলো কিভাবে জেনারেল স্টোরকে সাহায্য করে?
যখন কোনো ব্যাক্তি কোনো দোকান থেকে একটা জিনিস কিনবে সে যদি এই কোড গুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয় সে দেখতেই পারে জিনিসগুলো উপযুক্ত কিনা। সে ক্ষেত্রে এটাই বলা যে এই কোড গুলো একটা দোকানকে বিভিন্ন রকম বিপদের হাত থেকে বাঁচাতে পারে। এই কোড টা উপযুক্ততার একটা মাপকাঠি হিসাবে আমাদের লাইফকে সুরক্ষিত রাখে। একটা উদাহরণ দিয়ে এটা বলা যেতে পারে যে একটা চকলেট সেটা তে এই কোড গুলো থাকে তাহলে বুঝতে পারবে সেটার উপকরণ ঠিক। HSN কোডের সাহায্যে সেটা দেখে পিন কোডের শ্রেণী বিভাগ সেটা বোঝা যায়। এই কোড গুলো তখনই অবশ্যিক হয় যখন একটা কোম্পানির বাৎসরিক উৎপাদনের পরিমান দেড় কোটির বেশি হয়। আর কোনো জিনিসের উপকরণ এর সাথে তার আউটপুটের একটা মিল সবসময় থাকবে। এটা কখনো হয় না যে খাবার কোনো উপকরণ এর সাহায্যে জামাকাপড় তৈরির উপকরণ এক রকম হচ্ছে । কোনো বস্তুর ক্ষেত্রে GST এর কথা আমরা জানি। সার্ভিস ট্যাক্স তখন হয় যেটা থেকে আমরা সার্ভিস পেয়ে থাকি। এই কোড গুলো র মধ্যে কোনো টাকা পয়সা জনিত ব্যাপার অন্তর্ভুক্ত থাকে না। জাতীয় বা আন্তর্জাতিক স্তর এই ব্যাপার গুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে।