আপনার ব্যবসায়ের জন্য কেন ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেমগুলি গুরুত্বপূর্ণ
ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেম আধুনিক যুগে ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসা পরিচালনার নতুন একটি দুর্দান্ত কৌশল। এটি যেমন ব্যবসার সময় অপচয় কমিয়ে দেয় তেমনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার প্রশ্নে আপোষহীন ভাবে কাজ করে। কর্মীদের কাজের গতিও বাড়িয়ে দেয়। যেকোন খারাপ পরিস্থিতিতে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। আজকাল দূরনিয়ন্ত্রিত ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেমের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করা যায়। আসুন দেখে নেই ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেম কেন আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের খুব গুরুত্বপূর্ণ।
১। সম্পদের সুরক্ষাঃ
তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল এবং ব্যক্তিগত সম্পদ যেমন অর্থ, আসবাবপত্র সহ যাবতীয় সরঞ্জাম রক্ষা করার জন্য সবচেয়ে সহজ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যা ইলেক্ট্রনিক সিকিউরিটি ব্যবস্থা। সহজ কথায়, ইলেকট্রিক সিকিউরিটি তোমার ব্যাবসার বাহ্যিক এবং অভ্যন্তরীণ চুরি থেকে তোমার ব্যবসায়ীক খতিকে রক্ষা করবে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি এবং জালিয়াতিমূলক ক্রিয়াকলাপগুলি মূলত একটি অভ্যন্তরের কাজ। একটি পরিসংখ্যান দেখা যায় যে ৬০ শতাংশ জালিয়াতি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের দ্বারা হয়ে থাকে। এরকম চুরি বা জালিয়াতি প্রতিরোধের একটি মাত্র উপায় হল এর বিরুদ্ধে শক্ত প্রমাণ থাকা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি সিকিউরিটি ক্যামেরা ব্যবহার শুরু করা।
২। নিরাপদ কাজের জায়গাঃ
তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে একটি সক্রিয় অ্যালার্ম সিস্টেম থাকার ফলে তোমার কর্মচারীদের আশ্বাস দিতে পারবে যে, প্রতিষ্ঠানটিতে কোন আগুন লাগলে ভা ভূমিকম্পের মতন ঘটনা ঘটলে তারা আগেই সতর্ক বার্তা পেয়ে যাবে। তাছারা এই সক্রিয় অ্যালার্ম সিস্টেম কোন কাস্টমার মালামাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে অসদুপায় অবলম্বন করলে কর্মীরা খুব সহজেই তাকে চিহ্নিত করতে পারবে। এছাড়াও কর্মীদের কাজের শিফট পরিবর্তন ও অতিরিক্ত কাজ কেউ করতে না চাইলেও এই সক্রিও অ্যালার্ম গুরুত্ব ভূমিকা পালন করতে পারে। এমন সক্রিয় ব্যবস্থা তোমার ব্যবসার কর্মীদের মানসিক প্রশান্তির যেমন যোগান দেয় তেমনি জরুরী প্রয়োজনে তাদের ক্রিয়াকর্ম গুলি নিয়ন্ত্রনও করতে পারে।
৩। তাৎক্ষনিক সিকিউরিটির তথ্যঃ
তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেম গুলো লাগিয়ে তুমি তাতক্ষনিকভাবে তোমার কম্পিউটার, ট্যাবলেট বা স্মার্ট মোবাইল ফোনের মতো বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে তোমার ব্যবসা নিরাপদ আছে কিনা সেটা দেখতে পারবে। আধুনিক ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেমগুলি আজকাল দূর থেকে মোবাইল এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে অ্যাক্সেস করা যায়। নভেল প্রযুক্তি এবং ক্লাউড সিস্টেমের সাহায্যে তুমি বাড়িতে থাকো, বেড়াতে যাও বা ছুটিতে থাকো পৃথিবীর যেখানেই থাকো না কেনো তুমি সব সময় সর্বাবস্থায় তোমার ব্যবসার পরিস্থিতি দেখতে পারবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে। আধুনিক ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেমগুলি তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কোন ক্ষতি হতে লাগলে তাৎক্ষনিক ভাবে তোমার ফোনে সুরক্ষা সতর্কতা পাঠিয়ে দেয় ফলে তুমি কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আসলে কি ঘটছে বা ঘটতে যাচ্ছে সে সম্পর্কে জানতে পারবে।
৪। তোমার অনুপস্থিতিতেও নিরাপত্তা সমান থাকেঃ
আধুনিক ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেম তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লাগানোর ফলে তুমি দীর্ঘ সময়ের জন্য তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা প্রদানের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকতে পারো। যা তোমাকে অনেক বেশি মানসিক প্রশান্তি দেয় ফলে তুমি নিশ্চিন্তে তোমার অবসর সময় কাটাতে পারো। আধুনিক ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেমের সিসিটিভি সিকিউরিটি ক্যামেরা বিশ্বের যেকোন জায়গা থেকে অ্যাক্সেস করা যায়। তুমি বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকো না কেন মুহূর্তের মধ্যে হাতে মোবাইল ফোন দিয়েই দেখতে পাবে তোমার প্রতিষ্ঠান কেমন চলছে আর সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না। তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মূল্যবান যে সম্পদ রয়েছে সেই সম্পদগুলো খুব সহজেই বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারবে।
৫। গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ দিতে পারেঃ
তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভিতরে বাহিরে যে কোন ধরনের ডাকাতি হলে বা কোন চোর চুরি করলে আধুনিক ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেমের যে যে বিষয় গুলো রয়েছে যেমন সিকিউরিটি ক্যামেরা, অ্যাক্সেস কন্ট্রোল সিস্টেম, সিকিউরিটি এলার্ম এবং সিকিউরিটি কর্মকর্তাসহ সমন্বিত সিকিউরিটি ব্যবস্থা গুলি তোমার প্রতিষ্ঠানে কোনো সমস্যা বা ডাকাতির বিষয়গুলো সম্পর্কে সমন্বিতভাবে একটা শক্তিশালী প্রমাণ দিতে পারে। যা পরবর্তীতে যেকোনো রকম তথ্য প্রদানে তোমাকে বা পুলিশকে ব্যপোক সহায়তা করে।
৬। সাশ্রয়ী মূল্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থাঃ
ইংরেজীতে একটা কথা আছে “Better safe than sorry” তাই একবারে লক্ষ লক্ষ রুপি হারানোর চেয়ে কয়েক হাজার রুপি ব্যয় করে আধুনিক ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেম তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আপডেট করে নেওয়া অনেক বেশি ভালো এবং সাশ্রয়ী। এটি তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ব্যয় যেমন কমিয়ে দেবে তেমনি তোমার মানসিক প্রশান্তি বয়ে নিয়ে আসবে। কারণ এর সব থেকে ভালো দিক হলো তুমি তোমার প্রতিষ্ঠানটিকে নিজের ঘর থেকেই পরিচালনা করার সুযোগ পাবে। কর্মীদের দেখভালও ঘর থেকেই করতে পারবে। আর আগে যে সময়টা কোথাও যাওয়ার জন্য বের করতে পারতে না সেটা এই ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেম লাগিয়ে নেওয়ার ফলে অনায়াসে পেয়ে যাবে।
৭। অভ্যন্তরীণ চুরি নিয়ন্ত্রণঃ
যদি তোমার কর্মীরা তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভুলভাল কাজ করে থাকে। তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নির্দেশাবলী অনুসরণ না করে এবং তোমার প্রদত্ত কাজটি অসম্পূর্ণ করে বা ব্যর্থ হয় তবে এমন পরিস্থিতিতে তোমার ইলেকট্রিক সিকিউরিটি ক্যামেরা অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে। সিসিটিভি সিকিউরিটি সিস্টেম ক্যামেরা গুলোতে অবশ্যই ডিভাইস থাকতে হবে এই ডিভাইসগুলোকে কাউন্টারের নিকট স্থাপন করলে বা যেখানে তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা অবস্থান করে সেই সব জায়গায় তুমি এ সকল সিকিউরিটি ক্যামেরা লাগিয়ে দিলে তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান একেবারে তোমার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে এবং এই সিস্টেম লাগিয়ে দিলে সহজেই কর্মীদের অসৎ কাজের প্রতিরোধ করতে পারে। এটি মূলত একটি পরীক্ষিত কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা।
৮। দুর্বল জায়গা গুলো পর্যবেক্ষণ করাঃ
সিসিটিভি ক্যামেরা তোমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমনসব জায়গায় স্থাপন করা যেতে পারে যে সকল জায়গায় চুরি করা চুরি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। অসৎ উদ্দেশ্য যুক্ত লোকেরা বা অসৎ কর্মীরা ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান সেসব দুর্বল জায়গা গুলো দিয়ে তোমার ক্ষতি করতে পারে। তোমার সিসিটিভি ক্যামেরার মনিটরে তুমি যদি সে সব জায়গা পর্যবেক্ষণ করতে পারো তাহলে তোমার জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সুরক্ষিত করা অনেকাংশেই সহজ হয়ে যাবে। সেখান থেকে চুরি হওয়া বা আকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা ঘটনার বিষয়গুলো অনেকাংশে কমে আসবে যা তোমাকে অনেক বেশি লাভবান করবে।
৯। অপরাধী শনাক্ত এবং বিশ্লেষণ করেঃ
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত সিসিটিভি ক্যামেরা গুলো অপরাধীর মুখের ছবি বিশ্লেষণের মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করতে পারে এবং সিসিটিভি ক্যামেরা ও অন্যন্য সিকিউরিটি সিস্টেম গুলোর সমন্বিত বিশ্লেষণ পর্যালোচনা করে তুমি সহজেই তোমার ব্যবসা এবং প্রতিষ্ঠান কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। যেকোন জরুরি পরিস্থিতিতে তুমি সহজেই ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। এসব এতটাই সহজ যে, কোন ধরনেই কারিগরি জ্ঞান ছাড়াই যে কেউ স্বয়ংক্রিয় ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেমের মাধ্যমে তার ব্যবসাকে খুব ভালোভাবে পরিচালনা করতে পারে।
তোমার ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠানটিকে সবদিক থেকে সুরক্ষিত করতে চাইলে তুমি আজকেই ইলেকট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেম লাগিয়ে নিতে পারো। মাত্র কয়েকটা হাজার টাকা খরচ করার ফলে তোমার প্রতিষ্ঠান যেমন সুরক্ষিত থাকবে তুমিও নিরাপত্তার প্রশ্নে মানসিক প্রশান্তিতে থাকবে। এবং ব্যবসাটাকে ভালোভাবে বাড়ানর বিষয়ে আগের তুলনায় আরো বেশি করে মনোনিবেশ করতে পারবে।