তোমার রেস্তোঁরার মেন্যু ডিজিটাইজ করার সুবিধা
আজকাল অনলাইন ফুড অর্ডার ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এবং বহু লোকের পছন্দসই বিকল্প হিসাবে পরিণত হয়েছে। এটি কেবল দ্রুতই নয়, আরও বেশী সুবিধাজনক এবং গ্রাহকরা কোনও ব্যস্ত রেস্তোঁরা কর্মীর সাথে ফোনে কথোপকথন করার থেকে অনলাইনে মেনু, খাদ্য পর্যালোচনা ইত্যাদি ব্রাউজ করাকে একটি ভালো বিকল্প হিসেবে বিবেচনা করছে। কারণ, যখন কোনও ব্যবহারকারী ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করার পরিবর্তে মেনু থেকে সরাসরি কোনও আইটেম নির্বাচন করতে সক্ষম হয়, তখন ভুল হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়। এবার আসো দেখে নেই রেস্তোরার ম্যেনু ডিজিটাইজেশনের শুবিধা গুলো কেমন।
ডিজিটাল মেনু তোমার ব্যাবসার সময়ের সাশ্রয় করেঃ
ডিজিটাল মেনু বোর্ডগুলি নমনীয় এবং রেস্তোঁরা মালিকদের তাদের গ্রাহকদের সাথে দ্রুত এবং দক্ষ পদ্ধতিতে যোগাযোগ করার সুযোগ করে দেয়। তদুপরি, ডিজিটাল সিগনেজ সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে মেন্যুর চার্ট, মূল্য, আফার ইত্যাদি যে কোনও কিছু পরিবর্তন খুব সহজেই করা যায়। তাছারা তোমার গ্রাহককে টার্গেট করে তুমি তোমার রেস্তরার মেন্যু আপডেট রাখতে পারো এবং কোথায় কতজন গ্রাহক কোন মেন্যু বেশী পছন্দ করছে, কোন খাবারটা ভালো চলছে ইত্যাদি বিষয়েও পরিস্কার ধারনা পেতে পারো যা তোমার ব্যাবসাকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
কম ব্যয় এবং বেশী মুনাফা লাভঃ
ডিজিটাল সিগনেজ মেনু এবং বোর্ডগুলিতে একবার বিনিয়োগ করলেই চলে। প্রথমবার বিনিয়োগের মাধ্যমে, প্রতিবার সামান্য পরিবর্তন আসার সাথে সাথে সামান্য পরিবর্তন করলেই হয় যা তোমার ব্যয় কমিয়ে দেয়। অন্যদিকে কাগজের মেন্যুতে এমন সুযোগ না থাকায় তোমাকে আবার পুরো ম্যানুটাই পরিবর্তন করতে হচ্ছে যা তুলনা মূলক সময় সাপেক্ষ ও ব্যায়সাধ্য।
ডিজিটাল সিগনেজ সহ, গ্রাহকদের সাথে আরও বেশী পরিমাণ তথ্য ভাগ করা যেতে পারে। ভাগ করা তথ্যের অর্থ হলো আরও আরও বেশী পরিমাণে বিক্রয় যা তোমার মুনাফাকে বাড়িয়ে তুলবে।
রেস্তরার ম্যানুর ধারাবাহিকতা রক্ষা করেঃ
প্রচলিত ম্যানুর পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে অনেক সময়ে রেস্তরার কর্মচারীদের ম্যানু পরিবর্তন করতে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা থাকে যা তোমার রেস্তরাঁর ব্রান্ড ভ্যালুকে নিচে নামি দেয়। আর তোমার যদি কয়েকটা রেস্তরা ভিন্ন ভিন্ন লোকেশনে থেকে থাকে তবে ডিজিটাল ম্যানুই পারে প্রত্যেক জায়গায় এক সময়ে এক ম্যানুর প্রচলন রাখতে। এতে করে রেস্তরাঁর কর্মচারীদের মধ্যে যেমন যোগাযোগ বৃদ্ধি হবে ঠিক তেমনি গ্রাহকের কাছেও বিষয়টি মনে ধরার মতন হবে। তার সাথে তোমার রেস্তরাঁর ব্রান্ড ভ্যালুও সমান তালে বাড়বে।
ওয়েবসাইট বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোমার ব্যাবসার অবস্থানঃ
তোমার রেস্তোরাঁ পুরোপুরি ডিজিটাইজেশন এর আওতায় আনতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বা রেস্তরাঁর নামে একটি ওয়েবসাইট গ্রাহক সংখ্যা বাড়াতে খুব বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অর্ডার নিয়ে রেস্তরাঁর খাবারগুলো হোম ডেলিভারির ব্যবস্থাও করতে পারো। তাছাড়া ওয়েবসাইটে রেস্তরাঁর মেনু গুলো বিভিন্নভাবে ছবি তুলে প্রকাশ করতে পারো। এতে গ্রাহকেরা কোন খাবার টা অর্ডার করবে তা সহজেই বুঝতে পারবে। অন্যদিকে ব্যবসার প্রচার-প্রচারণা এবং প্রসারের জন্য ফেসবুক পেজের আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে। সেখানে কিছু বিশেষ দিনে মূল্যহ্রাস আফার, রেস্তরাঁ ব্যাবসার বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারো।
তোমার গ্রাহকেরা তোমার রেস্তরাঁর ভালো সেবা পেয়ে তাদের ইতিবাচক মন্তব্য ওয়েবসাইট বা পেইজে দিলে গ্রাহক সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাবে এবং রাতারাতি রেস্তরাঁর ভালো একটা সুনাম ও তৈরী হয়ে যাবে।
বিভিন্ন ভাষাঃ
ডিজিটাল বোর্ড থাকলে একাধিক ভাষায় মেনু প্রচার করা করা সহজ যা বিভিন্ন ভাষাভাষীর গ্রাহকে আকৃষ্ট করবে। প্রচলিত পদ্ধতিতে কেবল একটি ভাষাতেই মেনু মুদ্রণ করা হয় বলে এই বিশেষ সুবিধাটি পাওয়া যায় না। ভিন্ন ভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষের জন্য ভিন্নভিন্ন মেনু মদ্রন করার প্রয়োজন পরে যা অত্যন্ত ব্যায় ও সময় সাপেক্ষ এবং এমন মেন্যু গ্রাহকেও আকৃষ্ট করে না। তাই আলাদা ভাষাভাষীর মানুষের জন্য ডিজিটাল বোর্ড ই খুব ভালো একটা সমাধান।
গ্রাহকদের ভাল অভিজ্ঞতা দেয়ঃ
ডিজিটাল মেনু বোর্ডগুলি তোমার রেস্তরাঁ ব্যাবসার দক্ষতার প্রচার করে। বোর্ডগুলি সঠিক সময়ে এবং সঠিক জায়গায় তোমার রেস্তরাঁ ব্যাবসার সঠিক তথ্য সরবরাহের গতি নিশ্চিত করে। তোমার ব্যবসায়িক ভিডিও, খাবারের ছবি, রেসিপি এবং খাবারের উপাদানগুলি ছাড়াও এমন কিছু জিনিস তোমার গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে সে সব বিষয়গুলোও ডিজিটাল মেন্যু বোর্ড খুব ভালোভাবে তুলে ধরতে পারে। এসব নতুন এবং একদম ভিন্ন অভিজ্ঞতা এবং গ্রাহকদের ফিরে আসতে এবং তোমার রেস্তরাঁ ব্যাবসার আনুগত্যকে বাড়িয়ে তুলতে সহয়তা করে।
যোগাযোগ সহজ করে তোলেঃ
ডিজিটাল মেনু বোর্ডের সাহায্যে রেস্তোঁরার খাবার বা ম্যানু গুলো খুব সহজেই গ্রাহকদের নিকট বিপণন করা যায়। রেস্তরাঁর বিজ্ঞাপন প্রচার করাও খুব সহজ হয়। কাস্টমাইজড মেনুগুলি এবং তাদের খাবার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। খাবারের পুষ্টির মতো গুনাগুণের তথ্যও খুব সহজেই জানা যায়।
রেস্তোঁরা মালিকরা তাদের বিপণন কৌশলগুলিতে ডিজিটাল সমাধানগুলি তাদের গ্রাহকদের তুলনামূলক বেশী আকৃষ্ট করে তোলে। ডিজিটাইজেশনের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে রেস্তরাঁর বিপণনের কৌশলগুলিতে খুব সহজেই পরিবর্তন আনা যায় এবং বিক্রয় বাড়াতে নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করা যায়। এছাড়াও, নির্দিষ্ট গ্রাহক খুঁজে বের করতে এবং বিশেষ কোন উপলক্ষে বিশেষ অফার এবং যে কোনও আসন্ন ইভেন্ট সম্পর্কে তাদের অবহিত করতে সঠিক সময়ে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে বিজ্ঞাপন প্রকাশের সময়ও নির্ধারণ করা যায়।
গ্রাহকের অপেক্ষা করার সময়কে কমিয়ে দেয়ঃ
গ্রাহক যে রেস্তরাঁতেই যাক না কেনো তাকে খাবার অর্ডার করার পরে একা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় যা অত্যন্ত একটি বিরক্তিকর বিষয়। এমন পরিস্থিতি থেকে গ্রাহককে মুক্তি দিতে ডিজিটাল বোর্ড হতে পারে অন্যতম একটি সেরা সমাধান। খাবার অর্ডার করা পরে গ্রাহকের সম্মুখের বোর্ডটির এক জায়গায় কোন ফান ভিডিও প্লে করে দিলে গ্রাহকের বিরক্রিবোধ কমে যাবে এবং মানসিকভাবে খাবারের জন্য অপেক্ষা করার সময়টাকে আরও কমিয়ে আনবে। এমন কৌশল গ্রাহককে রেস্তরাঁ পরিত্যাগ করতে বিড়ত রাখে এবং আবার একি রেস্তরায় আসতে উতসাহিত করে।
স্থানীয় সম্প্রদায়ের সমর্থনঃ
যেকোনো শিল্প বেঁচিয়ে রাখার জন্য স্থানীয় সম্প্রদায়কে সবথেকে জড়িত রাখতে হবে। স্থানীয়দের সহায়তায় তোমার রেস্তোরাঁ শিল্পটি বছরের পর বছর ধরে বেঁচে থাকতে পারে। ডিজিটাল বোর্ডগুলো রেস্তোরাঁগুলোতে স্থানীয় সম্প্রদায়ের স্থানীয় সংবাদ, তাদের ভালো কাজ, এবং তাদের বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে রেস্তরাঁর ডিজিটাল বোর্ডে প্রদর্শিত ছবিগুলো তোমাকে তাদের সমর্থন যোগাতে সহায়তা করবে। এতে করে খুব সহজেই তোমার রেস্তোরাঁটি যে অঞ্চলে রয়েছে সেই অঞ্চলে যা কিছু চলছে এমন সমস্ত কিছুর জন্য তুমি তোমার রেস্তোরাঁটি কে কেন্দ্র হিসেবে পরিণত করতে পারেন। এমনটা হলে তোমার ব্যবসা আরও বেশি হারে বেড়ে যাবে এবং মুনাফাও তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়বে।
ডিজিটাল মেনু বোর্ডের অমূল্য সম্পদঃ
তুমি তোমার রেস্তোঁরা খাবার এবং পানীয়ের ক্ষেত্রে কী সরবরাহ করো সে সম্পর্কে গ্রাহকের বাস্তব প্রত্যাশাগুলি দেখাতে সক্ষম হবে। গ্রাহকের দৃষ্টি আকর্ষণ করার এবং তাদের আরও কিছু অর্ডার করতে আকৃষ্ট করার জন্য এই প্ল্যাটফর্মের বেশ কদর আছে। ডিজিটাল মেনু বোর্ডগুলি পুরোপুরি পুরোনো ধাচের চিহ্ন এবং পোস্টারগুলি প্রতিস্থাপন তো করেছেই সাথে এক্সট্রা হিসেবে বিজনেস কে বাড়াতে এবং নতুন নতুন বিপণন কৌশল অবলম্বন করতে সহয়তা করছে। একটি ডিজিটাল মেনু তোমাকে তোমার গ্রাহকদের চোখ কোথায় যায় তার উপর আরও ভাল নিয়ন্ত্রণ দেয়।
বর্তমান বিশ্বের প্রায় সব ব্যবসা কমবেশি ডিজিটাইজেশনের আওতায় চলে এসেছে। এই সময়ে তোমার ব্যাবসাটাকে ডিজিটাইজ করটা হবে সবথেকে বড় বুদ্ধিমানের কাজ। যদি তুমই এটা করতে পারো তবে পরবর্তী কয়েক দশক ধরে তুমি তোমার ব্যবসাটিকে নির্দ্বিধায় চালিয়ে যেতে পারবে।