গ্রিনহাউস ব্যাবসা শুরু করবেন কিভাবে?
গ্রিনহাউস বর্তমানে কৃষিক্ষেত্রে বিপুল পরিবর্তন এনেছে। যদি কেউ সঠিকভাবে গ্রিনহাউস প্রস্তুত করতে এবং তার রক্ষনাবেক্ষন করতে পারে, তবে তারা খুব কম জায়গায় অনেক বেশি পরিমানে সবজি ও অন্যান্ন কৃষিজ ফসল উৎপাদন করতে পারে। আর সেই কারনে এই গ্রিনহাউস বর্তমানে প্রচুর পরিমানে ব্যাবহার করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে গ্রিনহাউসের ব্যাবহার যখন শুরু হয়েছিল, তখন তা খুবই খরচসাপেক্ষ ছিল। তবে বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির কারনে খুব অল্প খরচে গ্রিনহাউস প্রস্তুত করা সম্ভব হচ্ছে। সেই কারনে বর্তমানে গ্রিনহাউসকে ব্যাবসার একটি মাধ্যম হিসেবে ধরা হচ্ছে। আর এই মাধ্যমে প্রচুর তরুন উদ্যোক্তারা ব্যাবসা শুরু করছে এবং প্রচুর পরিমানে অর্থ উপার্জন কড়ছে।
তবে গ্রিনহাউসের ব্যাবসা শুরু করতে গেলে বেশ কিছু বিষয়ে আমাদের ভাল করে জানতে হবে। তার কারন হল এই ব্যাবসার কাজকর্ম খুবই সহজ হলেও, এই ব্যাবসার কাজকর্মে অনেকগুলি ছোট ছোট পদক্ষেপ থাকে। আর এই পদক্ষেপগুলির কোন একটিও যদি আমরা ভুলে যাই, তবে আমরা দীর্ঘকালীন ব্যাবসায়িক কাজকর্মে অনেক সমসসার সম্মুখীন হতে পারি। তাই আমরা যদি সকল পদক্ষেপগুলি সম্পর্কে না জেনেই ব্যাবসা শুরু করি, তবে আমাদের ব্যাবসায় উন্নতি করতে দেরি তো হবেই, বরং তার পাশাপাশি ক্ষতিও হতে পারে। তাই আপনি যদি এই ধরনের ব্যাবসা শুরু করতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন, তবে মনযোগ দিয়ে এই প্রবন্ধটি পড়ুন, কারন এখানে আমরা গ্রিনহাউস ব্যাবসা শুরু করার কিছু পদক্ষেপ সম্পর্কে আলচোনা করব।
গ্রিনহাউস ব্যাবসার প্রাথমিক পদক্ষেপ
গ্রিনহাউস ব্যাবসা শুরু করার জন্য আমাদের বেশ কিছু প্রাথমিক প্রস্তুতি নিতে হয় যা না নিলে আমাদের ব্যাবসা শুরু করতে এবং চালিয়ে নিয়ে যেতে অসুবিধা হয়। তাই আমরা এই ব্যাবসা শুরুর প্রাথমিক পদক্ষেপ গুল আগে জেনে নেব।
১)জমি সংরক্ষণ-
গ্রিনহাউস ব্যাবহার করে কম জায়গায় অনেক বেশি উৎপাদন করা যায় এটা থিক। তবে একদমই জমি না থাকলে এই কাজ অসম্ভব। সেই জন্য আপনি যখন ব্যাবসা শুরু করতে যাবে, আপনাকে দেখে নিতে হবে যে আপনি জথেস্ত জমি সংরক্ষণ করতে পারবেন কিনা। তা কিনে হক, ভাড়া নিয়ে হক অথবা নিজেরই কোন পুর্ব-অধিক্রিত জমি ব্যাবহার করে হক। কারন এই জমি যদি আপনি সংরক্ষণ না করতে পারেন, তবে এই ব্যাবসার বাকি পদক্ষেপগুলি কনভাবেই নিতে পারবেন না।
২)জলের ব্যাবস্থা-
যেকোনো রকম কৃষিকাজে জমির পরে সবছেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল জল। তাই আপনি যখন গ্রিনহাউসের ব্যাবসা শুরু করতে জাবেন, তখন আপনাকে জেনে নিতে হবে যে আপনি আপনার গ্রিনহাউসের আসেপাসে জলে ব্যাবস্থা আছে কিনা। থাকলে আপনার কাজ একধাপ এগিয়ে থাকে, কিন্তু যদি জলের ব্যাবস্থা না থাকে, তবে যত শীঘ্র সম্ভব আপনাকে এই ব্যাবস্থা করতে হবে। তার কারন এই ব্যাবস্থা আপনি না করতে পারলে আপনি আপনার ফসল্কে কোনভাবেই সঠিক পরিমান পুস্টি দিতে পারবেন না জার কারনে আপনার ফসল স্বাস্থ্যবান হয়ে উৎপাদিত হয়।
৩)অর্থের সংস্থান-
আগের যে দুতি উপাদানের কথা আমরা বললাম, তা যেকোনো রকম ক্রিশিজাত কাজকর্মের জন্য অপরিবর্তনযোগ্য। তবে এরপর আমরা যে উপাদানের বিষয়ে আলচনা করব সেই উপাদানটি না থাকলে আপনি কোন ব্যাবসাই শুরু করতে পারবেন না। আর এই ত্রিতিয় উপাদানটি হল অর্থ। আপনি যদি সঠিক পরিমান অর্থ সংরহ মা করতে পারেন তাহলে আপনি কনভাবেই গ্রিনহাউস ব্যাবসা শুরু করতে পারবেন না।
গ্রিনহাউস ব্যাবসার সুবিধা
গ্রিনহাউস একটি নতুন ধরনের ব্যাবসা। তাই ব্যাবসা সম্পর্কে আমাদের অনেক কিছুই অজানা। তাই ব্যাবসা শুরু করার আগে আমাদের জেনে নেওয়া উচিত যে কেন আমরা এই ব্যাবসা শুরু করব। অর্থাৎ এই ব্যাবসা শুরু করে আমরা সুবিধা কি কি পাব।
১)অন্য ঋতুর ফসল-
গ্রিনহাউসের ব্যাবসায় যে কাঁচের ঘর বা গ্রিনহাউসের মধ্যে আমরা কৃষিকাজ করে থাকি সেখানে প্রাক্রিতিক শক্তির সর্বাধিক ব্যাবহার করা হয়ে থাকে। তাই এই গ্রিনহাউসের মধ্যে ইচ্ছে করলে সেই সকল ফসলও ফলান যায় যা সাধারনত বছরের অন্য সময়ে ফলে। আপনি যদি এইরকমভাবে ফসল উৎপাদন করতে পারেন, তবে আপনি অনেক লাভবান হবেন। কারন আপনি যদি সারা বছর যাবত টাটকা সবজি বাজারে প্রদান করতে পারেন যা সাধারনত বছরের কোন এক বিশেষ সময়ে পাওয়া যায়, তবে সারা বছর জুড়ে আপনার পন্যের চাহিদা সবসময় বেশি থাকবে।
২)উৎকৃষ্ট মানের ফসল-
গ্রিনহাউসে চাশ করার একটি বিশেষ সুবিধা হল আপনি সরাসরি প্রাকৃতিক শক্তির ব্যাবহার না করে তাকে এমন ভাবে ব্যাবহার করি যে তা সবছেয়ে বেশি কার্জকরীভাবে ফসলের উপর প্রভাব ফেলে। তাই আপনার গ্রিনহাউসে তৈরি ফসল, অন্যান্ন ফসলের চেয়ে বেশি উৎকৃষ্ট হয়।
৩)পোকামাকড়, জীবাণু ও রোগের নিয়ন্ত্রন-
গ্রিনহাউসের মধ্যে কৃষিকাজ করার আর একটি সুবিধা হল এই যে যেকোনো পোকামাকড় বা অন্যান কোন জীবজন্তু সহজে ফসলের সন্সপর্শে আসে না। ফলে জিবানু ও রোগের প্রভাবও আপনার ফসলে খুবই কম্প্রভাব ফেলতে পারে। আর তাই জন্য খুব সামান্য পরিস্রম করলেই আপনি আপনার কৃষিকাজের জায়গায় খুব সহজেই পোকামাকড়, জীবাণু এবং বিভিন্ন রোগ থেকে আপনার ফসল্কে রক্ষা করতে পারবেন।
গ্রিনহাউস ব্যাবসার অসুবিধা
আমরা আগেই বলেছি গ্রিনহাউসের ব্যাবসা এক নতুন ধরনের ব্যাবসা। তাই এতে যেমন বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে, তেমনই রয়েছে কিছু অসুবিধা যা অন্য কোন ব্যাবসায় নামলে আমাদের সম্মুখীন হতে হয় না। তাই আপনি যখন গ্রিনহাউসের ব্যাবসায় নাম্বেন, তখন আপনার জানা দরকার যে আপনি কি কি অসুবিধার সম্মুখীন হবেন।
১)অর্থবল-
একটি গ্রিনহাউস একদম প্রথম থেকে তৈরি করা একটি বেশ কস্ত সাধ্য কাজ। আর সেই কারনে এই কষ্টসাধ্য কাজকে পরিনাম দেওয়ার জন্য অর্থের প্রয়োজনও প্রচুর। তাই এই ব্যাবসা শুরু করতে গেলে আপনাকে বেশ খানিকটা অর্থবল নিয়ে প্রস্তুত হতে হবে। কারন অর্থবল না থাকলে আপনি ঠিকমত গ্রিনহাউসটি প্রস্তুত করতে পারবেন না যা আপনার ফসলের উপর প্রচুর প্রভাব ফেলবে।
২)উচ্চ উৎপাদন ব্যায়-
গ্রিনহাউসে ফসল উৎপাদন করলে তার গুনমান খুবই বেশি হয় একথা থিক। তবে সেই উচ্চ গুন্মান ধরে রাখার জন্য উৎপাদন ব্যায়ও প্রচুর হয়ে দাঁড়ায়। তাই আপনি ব্যাবসা শুরু করার পরও প্রতিবার উৎপাদন শুরু করার আগে আপনাকে বেশ কিছুটা করে অর্থ ব্যয় করতে হবে।
৩)দক্ষতা-
গ্রিনহাউসে চাশ করতে গেলে আপনাকে সেই চাষের প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে অবগত হতে হয়। শুধু অবগত হলেও কাজ ছল্বে না। আপনাকে বা আপনার কর্মচারিকে সেই কাজে দক্ষ হতে হবে। আর তা যদি না হয়, তবে আপনি কোন ভাবেই উচ্চ গুন্মানের ফসল উৎপাদন করতে পারবেন না।
এ ছাড়াও আরও অনেক বিষয় আছে যা একটি গ্রিনহাউস ব্যাবসা চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন। তবে উপরক্ত বিশয়গুলি এততাই গুরুত্বপূর্ণ যে সেগুলিকে উপেক্ষা করে থাকলে কোনভাবেই আপনি এই ব্যাবসা শুরু করতে পারবেন না। তাই এই প্রবন্ধের তথ্যগুলিকে মনজগের সাথে বিশ্লেসনের চেষ্টা করুন। এই ব্যাবসা শুরু করার জন্য যে প্রাথমিক পদক্ষেপের কথা আমরা বলেছি সেগুলির কথা মাথায় রেখে আপনার নিজের ব্যাবসায়িক পরিকল্পনা প্রস্তুত করুন। তারপর সেই সমস্ত সুবিধাগুলর কথা ভেবে দেখুন যা আমরা আপনাদের বলেছি। এতে আপনি আপনার ব্যাবসার জন্য নির্দিস্ট লক্ষ স্থির করতে পারবেন। এরপর আমরা যে অসুবিধা গুলির কথা বলেছি সেগুলির থেকে আমরা সাবধান হতে পারি যে আমাদের কি কি সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। আর এই সকল কাজ করার পরি আমরা আমাদের ব্যাবসা শুরু করতে পারব যা আমাদের খুব শীঘ্রই উন্নতি লাভে সাহাজ্য করবে।