কীভাবে নূন্যতম পদক্ষেপে অটোমোবাইল এক্সেসোরিস ব্যবসা শুরু করবেন?
আজকালকের বাজারে অটোমোবাইল এক্সেসোরিসের ব্যাবসা একটি চমৎকার ব্যবসার হতে পারে । আমাদের দেশের সব এলাকাতেই কম বেশী মোটরযান দেখা যায়। দিন দিন মোটর চালিত যানের চাহিদাও বেড়েই চলছে তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এর এক্সেসোরিসের চাহিদা। কিন্তু মটোর গাড়ির মতো শৌখিন ও প্রয়োজনীয় বাহন সব এলাকাতে দেখা গেলেও এর এক্সেসোরিস কিন্তু সব এলাকাতে পাওয়া যায় না। তাই তুমি চাইলে নিজের এলাকাতেই এই বিজনেস শুরু করে একজন সফল উদ্যোগতা হতে পারো।
অটোমোবাইল এক্সেসোরিসের ব্যাবসা করার শুরুর ধাপ টা কি?
তুমি যে এলাকাতে ব্যাবসাটা করতে চাও সে এলাকায় অটোমোবাইল এক্সেসোরিসের ব্যাবসা করার জন্য প্রথমেই দেখে নাও যে, সেখানে মটর চালিত যানবাহন গুলোর সংখ্যায় কেমন আছে। যদি দেখো, দু চাকা, তিন চাকা, চার চাকার মটর গাড়ি গুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে তবে তুমি নির্দ্বিধায় ব্যাবসাটা শুরু করে দিতে পারো।
সে যাইহোক, এর পরে খুঁজে দেখো, যে এলাকাতে ব্যাবসা করতে চাচ্ছ সেখানে এরকম দোকান আছে কিনা? যদি থেকেও থাকে তবে তুমি দেখবে সে দোকানটাতে সব রকম এক্সেসোরিস পাওয়া যায় না। তাই প্রথমেই দোকানীর দুর্বল দিক গুলোর সুযোগ নিয়ে নাও এবং ব্যাবসায় নেমে পরো। মনে রাখবে,ওর দুর্বল দিকগুলোই তোমার ব্যাবসার টারনিং পয়েন্ট।
দোকানের অবস্থান ও আয়তন কেমন হওয়া উচিত?
সাধারণত, তোমার একাকার জনবহুল বাজারে বা একইরকম দোকানের পাশে এর অবস্থান হওয়া উচিত। দোকানের আয়তন হওয়া উচিত পুঁজির উপর ভিত্তি করে অর্থাৎ তোমার পুঁজি কম হলে দোকানের আয়তন ছোট হবে পুঁজি বেশী হলে আয়তন বেশী হবে। যে এলাকায় দোকান দিতে চাও সে এলাকার বড় রাস্তা ঘেঁসে দোকান করলে সবথেকে ভালো হবে । এতে করে তোমার ক্রেতাদের দোকান খুঁজে পেতে যেমন সুবিধা হবে, তেমনি দোকানের প্রচারণাও হবে ব্যাপক।
ডেকোরেশন কেমন হবে?
দোকানের ডেকোরেশন হতে হবে প্রত্যেক যানবাহনের জন্য আলাদা তাক সাইড হিসেবে। তাছাড়া তাকের মধ্যে থাকতে হবে বিভিন্ন ধরনের পার্টস রাখার জন্য আলাদা খোপ এবং প্রতিটা তাক ও খোপে থাকতে হবে টাইপ করা কাগজে লাল কালিতে লেখা পার্টসের নাম। সেইসাথে, প্রত্যেক পার্টসের প্যাকেটের গায়ে বড় অক্ষরে লেখা থাকতে হবে তার দাম। যেন সহজেই বেছে নেওয়া যায়।
কর্মী সংগ্রহঃ
অন্ততপক্ষে দোকানে একজন কর্মীর দরকার আছে । আর সেই কর্মী যদি এক্সেসোরিস খোলা ও লাগাই এ দক্ষ হয় তাহলে তো কথাই নেই। তরতরিয়ে বড় হবে তোমার ব্যাবসা। কিন্তু এরকম কর্মী খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন তবুও নিজের স্বার্থে একবার খোঁজ করে দেখতে পারো যদি পাও তবে বিক্রির জন্য একজন বিশ্বস্ত কর্মী নিয়োগ দাও এবং তার সাথে তুমি নিজেও একটু যোগান দাও।
অটোমোবাইল এক্সেসোরিসের ব্যাবসার পুজি কেমন লাগে?
এই ব্যাবসায় পুঁজি একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কেনোনা তোমাকে মোটামুটিভাবে দোকানটা ডেকোরেশন করতে হচ্ছে। যদি তোমার নিজের দোকান করার জায়গা থাকে তবে এটি তোমার জন্য প্লাস পয়েন্ট আর না থাকলে তোমাকে দোকান নিতেও টাকা খরচ কর্যতে হবে। এরপর অটোমোবাইল এক্সেসোরিস কেনার পালা। তুমি যদি খুব কম পয়সায় এগুলো জোগার করতে চাও তবে পাইকারি বাজার উপযুক্ত স্থান। তুমি সেখানে কম দামে ভালো মানের এক্সেসরিস কিনতে পারবে। যদি তোমার হাতে খুব অল্প পয়সা থাকে তবে সে সব কম দামের অটোমোবাইল এক্সেসোরিস কেনো যেগুলোর চাহিদা গ্রাহকের কাছে বেশী।
যাইহোক, যদি ১টা কাজের ছেলে রেখে দাও তবে তাদের মাসিক বেতনেরও দরকার আছে। সব মিলিয়ে, প্রথম প্রথম তোমাকে ১ থেকে ১.৫ লাখ রুপি তো খরচ করতেই হবে। আর যদি তুমি নিজেই কাজ জানো তবে কাজের ছেলের বেতনটা বেচে গেলো। সেক্ষেত্রে তুমি আজই ব্যাবসাটা শুরু করে দিতে পারো।
অটোমোবাইল এক্সেসোরিস সস্তা দামে কোথায় পাওয়া যায়?
তুমি যদি খুব কম পয়সায় এগুলো জোগার করতে চাও তবে পাইকারি বাজার তোমার জন্য উপযুক্ত স্থান। তুমি সেখানে কম দামে ভালো মানের এক্সেসরিস কিনতে পারবে। আজকাল অনলাইন মারকেটপ্লেস গুলোতেও তুমি এসব এক্সেসরিস কিনতে পারবে। আর অনলাইন কেনাকাটার সবথেকে বড় সুবিধে হলো তোমাকে ওরা ঘরের দরজায় সব বয়ে দিয়ে যাবে। যদি তোমার হাতে খুব অল্প পয়সা থাকে তবে সে সব কম দামের অটোমোবাইল এক্সেসোরিস কেনো যেগুলোর চাহিদা গ্রাহকের কাছে বেশী।
প্রাথমিক প্রচারণা ও ক্রেতা সংগ্রহ কি করে হবে? সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেলে তোমার এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের মাধ্যমে দোকানের যাত্রা শুরু করাও। সেইসাথে শুরুর দিন থেকে প্রথম কয়েক মাস ক্রেতাদেরকে বিশেষ সুবিধার দাও যাতে তারা বেশ আকৃষ্ট হয় এতে করে তোমার দোকানের প্রচার প্রচারণা বেশ ভালো হবে। তোমার দোকানের প্রথম ১০০ জন ক্রেতাকে নিয়ে করতে পারো কৃতজ্ঞতা কৃতজ্ঞতা স্বারকের ব্যবস্থা যা তোমার দোকানের প্রচারণাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে।
এছাড়াও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোমার ব্যাবসার একটি আইডি খুলেও ফ্রিতে প্রচার প্রচারণা করতে পারো। সেক্ষেত্রে তোমার প্রতিদিনের কাজের আপডেট গুলো পোস্ট করলেই অনেকাংশেই ক্রেতারা অকৃষ্ট হয়ে যাতে পারে। অন্যদিকে তোমার দোকানের নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলে তোমার এরিয়াতে তোমার দোকানের বিজ্ঞাপন বুস্ট করে দিতে পারো যেটি আরও ভালো ফল বয়ে আনবে।
অটোমোবাইল এক্সেসোরিসের ব্যাবসার সম্ভাব্য আয় কেমন?
প্রথমেই বলে রাখি অটোমোবাইলের এক্সেসোরিস বিজনেস একটি লং টার্ম বিজনেস। মোটামুটিভাবে একবার দাঁড় করাতে পারলে তোমাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না। ইন্ডিয়াতে এই ব্যবসার অনেক বড় বাজার আছে। সিট কভার, বডি কভার, ডি কভার এসব পরিবর্তন করে সর্বনিম্ন ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ আয় করা যায়।
এছারো, বিনেদোন এর জন্য গাড়িতে যে সব এক্সোসোরিস যেমনঃ স্পিকার, বুফার, এমপ্লিফায়ার এগুলো ব্রান্ড ভেদে সেগুলো পরিবর্তন করে ৪৫ শতাংশ পর্যন্ত আয় করা যায়।
এভাবে সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে সবকিছু যাচাই বাছাই করে তুমি তোমার নিজ এলাকায় অটোমোবাইল এক্সেসরিস ব্যাবসা দোকান গড়ে তুলতে পারো। অটোমোবাইল এক্সেসোরিসের ব্যাবসা অত্যন্ত চাহিদা রয়েছে এবং লাভজনকও। তবে মনে রাখবে, তোমার দোকানে ক্রেতা টানতে প্রথম প্রথম নানা কৌশল অবলম্বন করতে হবে সেসব কৌশলের সবটাই যেন হয় তোমার ব্যবসার জন্য বিশ্বাসের ভিত্তি স্বরূপ।