সফলভাবে অনলাইন পোশাকের ব্যবসা কিভাবে শুরু করবেন?
মুঠোফোন এখন সবারই হাতে আর তাতে ইন্টরনেটের কানেকশন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে আমাদের বিচরণ কে কয়েকগুন বাড়িয়ে দিয়েছে। অনলাইন পোশাকের ব্যবসা এখন বেশ পপুলার। কম টাকা বিনিয়োগ করে সফল হওয়ার চান্স অনেক বেশি বলে ইয়ং জেনারেশন থেকে শুরু করে অনেকেই পোশাকের ব্যবসা তে ইন্টারেস্ট দেখাচ্ছেন। আর এতে মানুষের চাহিদাও বাড়ছে। দোকানে গিয়ে পোশাক কেনার বদলে অনলাইন অর্ডার করে দিলাম আর বাড়িতে এসে সেই জিনিসটা পেয়ে গেলাম অনেকের কাছেই সেটা ব্যবসা করার এক নতুন সুযোগ। তবে পোশাকের ব্যাবসায়ে সফল হওয়ার জন্যে কোন বয়সের ক্রেতা কি ধরণের জিনিস পছন্দ করেন সেই ব্যাপারে তোমাকে মাথা ঘামাতে হবে। পোশাক এমন একটা ব্যাপার যার প্রতি সব বয়সের মানুষেরই একটা চাহিদা আছে। নিজেদের সাজাতে কে না ভালোবাসে ? সবথেকে বেশি চাহিদা থাকে হরেক রকম ডিসাইনার এই জামাকাপড়ের ওপরেই। ছেলে, মহিলা থেকে বয়স্ক কোনো মানুষ বিভিন্ন রকমের পোশাক পরিছন্ন এর ভালোবাসা , প্যাশন থাকে।
জামাকাপড়ের ব্যবসা শুরু করার জন্যে যে বিষয়গুলি মনে রাখতে হবে–
- ক্যাশ অন ডেলিভারির সাথে সাথে এখন অনলাইন পেমেন্ট অপশন সবজায়গায় রাখা হয়। যেহুতু সবসময় ক্যাশ নিয়ে ঘোরা সম্ভব নয় তাই অনেকেই ব্যাঙ্ক ট্রান্সফার করে দেন। তাই তোমাকে ব্যবসা শুরু করার আগেই এইসব একাউন্ট রিলেটেড ব্যাপারগুলো সমাধান করে নিতে হবে। কেউ যদি কোনো জিনিস অর্ডার করার সময় তোমাকে কিছু জানতে চায় আর তুমি নিজেই যদি কনফিউসড না হও নতুন হোক বা পুরোনো সে একটু অসন্তুষ্ট হবে একথা বলাই যায়।
- যেহেতু অনলাইন মার্কেটিং ওয়েব সাইট গুলিতে একাউন্ট ওপেন করার জন্যে একটা পরিমানে টাকা দিতে হয়, তাই প্রথমে ফ্রি সাইট গুলো থেকে তোমার ব্যবসা শুরু করো, কিছুটা গুছিয়ে নিয়ে তোমার ব্যবসা শুরু করলে দেখবে তোমারই উৎসাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে সবরকম ভাবে তোমার ব্যাবসার বিজ্ঞাপন দেয়ার কৌশল তোমাকেই ভাবতে হবে।
- জামাকাপড়ের বিস্তৃতি অনেকটাই সে দুই বছরের বাচ্চাদের জামাকাপড়ই হোক বা গলার স্কার্ফই হোক, যে বিভাগ তা নিয়ে তুমি ব্যবসা করতে চলেছো তার বিষয়ে তোমার কিছুটা জ্ঞান থাকা জরুরি। যেমন ধরো তুমি শাড়ির ব্যবসা করতে গেলে কোনো কাস্টমার কিছু জিজ্ঞাসা করলো তোমাকে সেটা ঠিক ভাবে উত্তর দিতে হবে।
- তুমি যখন কোনো ব্যবসা শুরু করছ কেউ তোমার কোনো অসুবিধা শুনতে রাজি হবে না। তাই হাসিমুখে সবার চাহিদা , তাদের কোনো অসুবিধা থাকলে সেটাও মনোযোগ দিয়ে শুনতে হবে। যেহুতু অনেকেই এখন এই কাপড়ের ব্যবসা শুরু করছে তোমাকেও কিছু স্পেশাল ভাবে ভাবতে হবে। স্পেশালিটি তোমাকে মৌলিক ও জনপ্রিয় করে তুলবে। যেহুতু সব মানুষের চাহিদা একরকম নয় তাই কে কোন টাইপের জিনিস চাইছে সে ব্যাপারে তোমাকে সতর্ক থাকতে হবে।
- কাজের বেশি চাপ নেয়া চলবে না , হয়তো প্রথমে তেমন ভাবে ব্যবসা দাঁড় করতে পারছো না তার জন্যে আশা ছাড়বে না , মনের জোরই তোমাকে সব বাধা পেরিয়ে তোমাকে সাহায্য করবে। সারাদিন কি কি কাজ করলে, কি রিঅ্যাকশন পেলে সব একটা জায়গায় নোট করো, টাকাপয়সার হিসাবও ঠিক করে লিখে রাখো। তুমি কী কী করতে চাইছো , কীভাবে করবে তা নিয়ে হয়তো বিশদ চিন্তা করছ, কিন্তু যেগুলো ভাবছো সেগুলো ঠিক ভাবে কাজকে বাস্তবায়ন করতে পারছো না। এভাবে তুমি বুঝবে বেশি এগোতে প্রচুর সমস্যা আসছে। তাই প্রতিদিনের তোমার প্ল্যান , কাজ সব টা নোট করে রাখো। প্রতি মাসে কতলাভ করতে পারছো তার হিসাব রাখো , সারাদিনের শেষে দেখো কোন কাজ কমপ্লিট হলো কোনটা অসম্পূর্ণই রয়ে গেলো।
- পেমেন্ট করার পর বা অর্ডার দেয়ার পর সে জিনিসটা কবে হাতে পাবে এই নিয়ে একটা আশা করেই থাকে। তোমাকে ব্যাবসার শুরু থেকেই সতর্ক থাকতে হবে সঠিক ভাবে সঠিক মানুষের কাছে সেটা যেন পৌঁছে যায়।প্যাকিং যেন ঠিক ভাবে থাকে। কারুর জিনিস যেন কাউর কাছে ভুল করে চলে না যায়। এগুলো যে কোনো কাস্টমারের থেকে খারাপ ইম্প্রেশন পড়ার জন্য বড়ো কারণ হতে পারে। তবে কোনো কিছু করতেই বেশি দেরি করো না এখন অনেকেই এই অনলাইন ব্যাবসার সাথে যুক্ত হয়ে পড়ায় এর কম্পেটিশন এখন তুঙ্গে তাই তোমার জায়গা কেউ নেয়ার আগেই তুমি নতুন উদ্দ্যমে তোমার কাজ শুরু করে দাও।
- তুমি একটা কাজ করতে পারো , কোনো জিনিস অর্ডার হয়ে যাওয়ার পর সেই কাস্টমারের ফিডব্যাক পাওয়ার জন্যে তাকে জিজ্ঞাসা করতে পারো। তার যদি কোনো রকম অভিযোগ থাকে সেটা যেমন তোমাকে মন দিয়ে শুনে সল্ভ করতে হবে তেমনি সে যদি খুশি হয় তাতেও অভিবাদন জানাতে হবে।
- তবে কোনো কাস্টমার যেন তোমার কোনো কাজে ক্ষুব্ধ না হয় এদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এখনকার দিনে নিজের বাড়িতে স্টক না রেখেও অনলাইন মাৰ্কেটিং করা যায়। তবে অর্ডার নেয়ার আগেই তুমি ঠিক ভাবে স্টোরে সেই মাল আছে কিনা খবর নিয়ে নাও, কোনো কাস্টমার অর্ডার করার পর সে যদি শোনে তোমার কাছে ওই প্রোডাক্ট টা নেই সে মনোক্ষুন্ন হতে পারে।বরং তাকে বলুন কতদিন পর বা কবে জিনিসটা অভ্যালেবেল হবে। সফলতার মূল মন্ত্র সবাইকে পাশে নিয়ে এগিয়ে চলা। কেউ যাবে কেউ আসবে এই টা মেনে নিয়েই আমাদের প্রচেষ্টা করতে হয়।
- তুমি তোমার ব্যাবসার এই ছোট্ট প্রচেষ্টাকে একটা নাম দিতে পারো। নামের সাহায্যে অনেকের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য হয়। যেহুতু তোমার নাম সবাই জানবে না তাই তোমার বুটিক তার সাহায্যে তুমি সবার কাছে পরিচিত হও। বর্তমান সময়ে অনেকেই দোকানে গিয়ে জিনিসপত্র কিনতে ভয় পান, র যেহুতু এটা জামাকাপড়ের মতো জিনিস সব বয়সের মানুষই চাইছেন বাড়িতে বসে সেটা পেতে।
- প্রথমে কি ধরণের জিনিস বেশি ট্রেন্ড সেটা দেখে তোমার অ্যাড শুরু করো। তোমার অনলাইন স্টোর শুরু করার পর তোমাকে খেয়াল রাখতে হবে বিক্রি যাতে পারে, তোমার জিনিস যাতে অনেক লোকের চোখের সামনে আসে, র তাই জন্য সব রকম সোশ্যাল সাইট গুলোর সাহায্য নিতে পারো, ফেইসবুক থেকে শুরু করে ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটস্যাপ তাছাড়া অনলাইন মার্কেটিং সাইট গুলো তো আছেই।
- কাউকে শত্রু ভেবে তার সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার না করাই ভালো। পুরোনো ঝামেলা থাকলে সেসব ভুলে এগিয়ে চলো। তোমার পজিটিভিটি তোমাকে তোমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে। ব্যবসা শুরু করতে গিয়ে দেখবে তোমার প্রতিযোগী অনেক। তাই যেমন দামের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে তেমনি কারোর জিনিসটা খারাপ আমার জিনিসটা ভালো, এইসব কথা থেকে আপনি যেটা ভালো বুঝবেন সেটাই নেবেন এভাবে কাস্টমার্ সাথে কথা বলো তোমার সুনাম বাড়বে বই কমবে না। যে কোনো ব্যাবসায়ীর আসল অস্ত্র হলো তার পরিশ্রম, কথা বলার ক্ষমতা, এবং বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল। নিজের কোনো ভুল কে প্রশয় দেয়া চলবে না, পরের বার সেই ভুল যাতে না হয় সেই দিতে খেয়াল রাখতে হবে।
উপসংহার
অনলাইন বিজনেসের মাধ্যমে যেকোনো প্রোডাক্ট ইন্টারনেটের যে কোনো মাধ্যমে মানুষের কাছে বিক্রি করে ইনকাম করতে পারবে। সেই মাধ্যমকেই তুমি একটি অনলাইনে করা ব্যবসা হিসেবে ভাবতে পারো।এমন অনেক নিত্য নতুন ব্যবসা আছে যেগুলোর কথা মানুষ ভাবতেই পারে না। তুমি যদি এরকম নতুন কিছু ভেবে শুরু করতে পারো তোমার সফলতা কে আটকাবে। সবকিছুতেই আসল কথা হচ্ছে তোমার মানসিক শক্তি, কাজ করার প্রবল ইচ্ছা এবং ভেঙে না পড়ার দৃঢ়তা। তুমি একটা ভালো ভাবে প্ল্যান করে তোমার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাও।